দেশে চলমান বন্যায় এ পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ফেনীতে ১৭ জন। এ ছাড়া কুমিল্লায় ১৪ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, খাগড়াছড়িতে ১ জন, নোয়াখালীতে ৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন মৌলভীবাজারে ১ জন ও কক্সবাজারে ৩ জন মারা গেছেন। মৌলভীবাজারে ১ ব্যক্তি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
আক্রান্ত ১১ জেলার ৬৮ উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন/পৌরসভা ৪২৯টি। ১১ জেলায় মোট ১০ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ৪৬৩। পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ৩ হাজার ৪০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় মোট ৫ লাখ ২ হাজার ৫০১ ব্যক্তি ও ৩৬ হাজার ৪৪৮ গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে মোট ৫৯৫টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নগদ বরাদ্দ ৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা করা হয়েছে। ন্ত্রণালয় জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সংগৃহীত মোট ১ লাখ ৪ হাজার ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, কাপড় ও পানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের (ডিডিএম) মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। ডিডিএম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
বন্যায় আক্রান্ত জেলার প্রশাসকদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, মেডিক্যাল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানায়।
বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোয় মোবাইল ও টেলিফোন যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক খোলা রয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
এ ছাড়া সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য-সহায়তা দিতে চাইলে আগ্রহী ব্যক্তিরা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের অ্যাকাউন্টে অর্থ সহায়তা পাঠাতে পারেন। হিসাবের নাম: 'প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল', ব্যাংক: সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখা, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, হিসাব নম্বর: ০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩।
যারা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে) দিতে চান, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সহায়তা গ্রহণ করবেন।
যারা ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে) দিতে ইচ্ছুক তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল (মোবাইল-০১৭১৮-০৬৬৭২৫) বা সিনিয়র সহকারী সচিব শরিফুল ইসলামের (মোবাইল-০১৮১৯২৮১২০৮) সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা যাচ্ছে।